This is this sidebar for a particular page. It can be edited by editing a page from within the control pannel.
আয়াত ১: মোশি বা মূসা এবং আরেন বা হারুন ফারাও বা ফেরাউনের কাছে যান
প্রথম আয়াতটি বর্ণনা করে যে, ঈশ্বরের আদেশ অনুযায়ী মোশি বা মূসা ও আরেন বা হারুন ফারাওয়ের বা ফেরাঊনের কাছে যান এবং ইসরায়েলীয়দের মুক্ত ও স্বাধীন করার অনুরোধ জানান। তাঁরা জানান, ঈশ্বরের নির্দেশ অনুসারে ইসরায়েলীয়রা মরুভূমিতে গিয়ে উৎসব পালন করতে চায়। এখানে “উৎসব” শব্দটি ঈশ্বরের প্রতি তাদের উপাসনা বা আনুগত্য বোঝায়। এটি বোঝায় যে ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্যের জন্য মুক্তি ও স্বাধীনতা প্রয়োজন।
আয়াত ২: ফারাও বা ফেরাউনের অবাধ্যতা
দ্বিতীয় আয়াতে বর্ণিত আছে তাঁদের অনুরোধের কথা শুনে ফারাওয়ের বা ফেরাঊনের প্রতিক্রিয়া। ফারাও বা ফেরাউন ছিল অহঙ্কারী। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “এই ঈশ্বর কে?, কেনো আমি তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে ইসরায়েলিদের মুক্তি বা যেতে দেব? ” এই প্রশ্নটি ছিল ঈশ্বরকে না চেনার বা মান্য না করার বা অস্বীকৃতির প্রথম সংকেত। সেই সময় মিশরীয়রা অনেক দেবদেবীর পূজা করত এবং ইসরায়েলীয়দের ঈশ্বর তাদের কাছে ছিল অস্বীকৃত এবং অপরিচিত ।
আয়াত ৩: মোশি বা মূসার এবং আরেন বা হারুনের অনুরোধ
মোশি বা মূসা ও আরেন বা হারুন ঈশ্বরের সাথে সাক্ষাতের ঘটনা বর্ণনা করেন এবং ফারাওকে বা ফেরাঊনকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা মরুভূমিতে তিন দিনের জন্য যাবেন এবং তাঁদের ঈশ্বরকে তাঁদের ত্যাগ ও আনুগত্য প্রকাশ করবেন সন্তুষ্ট করার জন্য আর এটা না করতে পারলে ঈশ্বর প্লেগ ছড়িয়ে দেবেন তাঁদের মাঝে যা থেকে তাঁরা ব্যতীত আর কেউ রক্ষা পাবে না। মরুভূমিতে যাওয়ার জন্য তিন দিনের সময় চেয়ে ঈশ্বরের উপাসনার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এতে ঈশ্বরের প্রতি তাদের আনুগত্য এবং ঈশ্বরের শক্তি প্রকাশ পায়।
আয়াত ৪-৫: ফারাও বা ফেরাঊনের অস্বীকার
ফারাও বা ফেরাউন তাঁদের নিষেধ করে দিলো এবং তাঁদের প্রশ্ন করলো কেনো তাঁরা তাঁদের কাজ থেকে বিরত রাখতে চাইছে? তাঁরা যেনো তাঁদের কাজে ফিরে যায়।
ইসরায়েলীয়দের কাজ বন্ধ করার জন্য মোশি বা মূসা ও আরেন বা হারুনকে দোষারোপ করেন ফারাও বা ফেরাউন। তাঁর মতে, ইসরায়েলীয়রা কেবল অলস, আর তাই ঈশ্বরের উপাসনার অজুহাত দেখাচ্ছে। এখানে ফারাও ইসরায়েলীয়দের শুধু শ্রম দাসত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন, মানুষ হিসেবে নয়।
আয়াত ৬-৯: ফারাও বা ফেরাঊনের কঠোর নির্দেশ
এই আয়াতে বর্ণিত আছে ফারাও বা ফেরাঊনের কঠোর নির্দেশ ও জুলুম। তিনি নির্দেশ দিলেন আর তাঁদের খর সংগ্রহ করে দেয়া হবে না বরং তাদের নিজেদেরই খর সংগ্রহ করে আনতে হবে এবং সমপরিমাণ ইট তৈরী করতে পূর্বের পরিমাণে, এই পরিমাণ যেনো না কমে।
ফারাও বা ফেরাউন তাঁর দাসত্বের শেকল আরও শক্ত করেন। তিনি ইসরায়েলীয়দের নিজেদের খড় সংগ্রহ করতে বলেন, কিন্তু কাজের পরিমাণ কমাননি। এটি ছিল ইচ্ছাকৃত নিষ্ঠুরতা, যাতে তারা ঈশ্বরের উপর মনোযোগ দিতে না পারে। ফারাও বা ফেরাউন দাবি করেন, তারা অলস এবং মিথ্যা দাবি করছে।
আয়াত ১০-১৩: ইসরায়েলীদের আপ্রাণ চেষ্টা
ফারও বা ফেরাঊনের এর নির্দেশে সবাই মিশরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল খড়ের খোঁজে। দাস পরিচালকরা তাঁদের চাপ দিতে থাকলো এটা বলে যে, “প্রতিদিনের যে পরিমাণ কাজ রয়েছে খড় পাওয়া মাত্রই যেনো সম্পূর্ণ হয়।”
ইসরায়েলীয়দের এখন মিশরের সর্বত্র ছুটতে হয় খড় সংগ্রহের জন্য। দাসত্বের এই কঠোরতা তাদের দুঃখ আরও বাড়ায়। এটি প্রমাণ করে যে , যখন ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী জীবনে পরিবর্তন আনতে চাওয়া হয়, তখন শয়তান বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
আয়াত ১৪-১৬: ইসরায়েলীয়দের আবেদন
তারপর ইস্রায়েলীয় নেতারা ফারাও বা ফেরাউনের কাছে আবেদন জানাল: ‘কেন তুমি তোমার দাসদের সাথে এমন আচরণ করলে?
ইসরায়েলীয় নেতারা ফারাওয়ের কাছে অভিযোগ করেন যে তাদের কাজ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারা ফারাওকে বা ফেরাউনকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে এটি অবিচার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তাদের কথা ফারাও বা ফেরাউন শোনেন না।
আয়াত ১৭-১৯: ফারাও বা ফেরাঊনের নিষ্ঠুরতা
ফারাও বা ফেরাউন বললেন “ অলস, তোমরা অলস! আর তোমরা বলছ,” তোমাদের যেনো যেতে দেয় তোমাদের ঈশ্বররের উপাসনার জন্য।”
ফারাওয়ের দৃষ্টিতে ঈশ্বরের উপাসনা করার ইচ্ছা ছিল অলসতার লক্ষণ। তিনি ইসরায়েলীয়দের প্রতি তাঁর মনোভাব পরিবর্তন করেননি এবং তাদের আরও কঠোর শ্রমে বাধ্য করেন।
আয়াত ২০-২১: ইসরায়েলীয়রা মোশি বা মূসা এবং আরেন বা হারুনকে দোষারোপ
যখন তারা ফারাও বা ফেরাঊনের কাছে থেকে প্রস্থান করলো তখন মোশি বা মূসা ও আড়েন বা হারুন তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিল, তাঁরা তাঁদের এ দুর্ভোগের জন্য তাঁদের দায়ী করলো এবং বলল,” ঈশ্বর তোমার দিকে তাকান এবং তোমার বিচার করুন!”
ইসরায়েলীয়রা তাদের কষ্টের জন্য মোশি বা মূসা ও আরেন বা হারুনকে দায়ী করেন। তাঁরা মনে করেন, মোশি বা মূসা ও আরেন বা হারুনের কারণে ফারাও বা ফেরাউন তাদের প্রতি আরও নিষ্ঠুর হয়েছেন। এটি আমাদের শেখায় যে দুঃখের সময় বিশ্বাস রক্ষা করা কঠিন হতে পারে।
আয়াত ২২-২৩: মোশি বা মূসার ঈশ্বররের প্রতি প্রশ্ন
মূসা ঈশ্বরের কাছে ফিরে যান এবং প্রশ্ন করেন,” কেনো, ঈশ্বর, কেনো এই মানুষগুলোর উপর এই অবিচার?” কেনো ঈশ্বর তাঁর মানুষদের এই অন্যায় অবিচার বা জুলুম থেকে মুক্ত করছেন না?
তিনি বুঝতে পারেন না কেন ঈশ্বরের পরিকল্পনা এত কঠিন। এটি ঈশ্বরের কাছে প্রশ্ন তোলার সাহস এবং মানবিক দুর্বলতার পরিচয় দেয়।
জীবনে দুঃখ-কষ্ট এলে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখা কঠিন হতে পারে। তবে এই অধ্যায় আমাদের শেখায় যে ঈশ্বরের পরিকল্পনা সব সময় সঠিক।